3rd February, 2020, 6:30 AM
কুড়িগ্রামে ডেপুটেশন ও অনিয়মতান্ত্রিক বদলির কারণে বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চরম সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে। একটি সিন্ডিকেট চক্র মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডেপুটেশনের সুপারিশ এনে শিক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন।
এর ফলে একদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। অন্যদিকে শহরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান প্রক্রিয়া। এতে সরকারের প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন কার্যক্রম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে শিক্ষক সংকট। এছাড়াও অনুপস্থিতি এবং সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না আসার প্রবণতা রয়েছে ব্যাপক। সেই সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেপুটেশন বাণিজ্য। বিশেষ করে শহরে বসবাস করে এবং প্রভাবশালী পরিবারের লোকজন গ্রামীণ স্কুলে যোগ দিয়েই মাস না পেরুতেই ডেপুটেশনে চলে আসেন শহরে। ফলে শিক্ষক ও পাঠদান সংকটে পড়ে যায় গ্রামের বিদ্যালয়টি।
সূত্র জানায়, নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নে অবস্থিত চরাঞ্চল ও নদী বেষ্টিত দামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষক জিন্নাতুন নেছা মুক্তা ২০১৩ সালে যোগদান করেন। নদীপথ হওয়ায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। গত ২০১৯ সালে ডেপুটেশনে চলে আসেন সদর উপজেলার পূর্ব চন্ডিপুর বিদ্যালয়ে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পূর্বের বিদ্যালয়ে ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি জানুয়ারিতেই আবার ডেপুটেশনে কুড়িগ্রাম পিটিআই পরীক্ষণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন।
এ দিকে, দামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদলি নিয়ে চলে যান অন্য বিদ্যালয়ে। তিনজন শিক্ষকের মধ্যে দুজন অন্যত্র থাকায় শিশু শ্রেণিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মোসলেমা খাতুন এখন চালাচ্ছেন পাঠদান প্রক্রিয়া।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহ আলম জানান, ৩শ শিক্ষার্থীদের বিপরীতে দুজন মিলে কোনোরকমে পাঠদান করে আসছেন।
অপরদিকে, সদর উপজেলার করিমের খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪১৩ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১০ শিক্ষকের একজন আইরিন বেগম। তিনি ২০১৪ সাল থেকে ডেপুটিশনে আছেন উলিপুর উপজেলায়। এছাড়াও সদরের ভোগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লায়লা আরজুমান্দ বানু ২০০৯ সাল থেকে পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আছেন। এছাড়াও একই বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ডেপুটেশনে রয়েছেন। সদরের আশরাফিয়া স্কুলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের বিপরীতে পাঁচ শিক্ষক থাকার পরেও দুই শিক্ষক ডেপুটেশনে যোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলার শিক্ষা কর্তৃপক্ষ কোনো মতামত না দিলেও জানা যায়, প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক নিজেদের সুবিধামতো বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আছেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তার অগোচরেই মন্ত্রাণালয় থেকে বেশ কিছু বদলি এবং ডেপুটেশন হয়েছে। তবে তিনি আশ্বাস দেন দ্রুত ডেপুটেশন বাতিলসহ শূন্য পদ পূরণে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
#হুমায়ুন কবির সূর্য্য, কুড়িগ্রাম
We appreciate you contacting us. Our support will get back in touch with you soon!
Have a great day!
Please note that your query will be processed only if we find it relevant. Rest all requests will be ignored. If you need help with the website, please login to your dashboard and connect to support